উপায়-উপকরণাদির কার্যকর ব্যবহার করে লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ কার্যকে ব্যবস্থাপনা বলে । এ ধরনের কাজ যারা সম্পাদন করেন তাদেরকে ব্যবস্থাপক বলা হয়ে থাকে । অন্যদিকে ব্যবস্থাপনার উপরিপর্যায়ে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের প্রয়াস-প্রচেষ্টাকে প্রশাসন বলা হয়ে থাকে । একটা প্রতিষ্ঠানের সংগঠন কাঠামোর বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থাপক কার্য পরিচালনা করেন । স্তরভেদে তাদেরকে উচ্চ, মধ্য ও নিম্ন পর্যায়-এ তিনভাগে ভাগ করা হয় । স্তরীয় পার্থক থাকায় কার্য প্রকৃতিতে কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও সকল পর্যায়ের ব্যবস্থাপকগণকেই পরিকল্পনা প্রণয়নসহ সকল ব্যবস্থাপনা কাজ কমবেশি সম্পাদনের প্রয়োজন পড়ে । পরিকল্পনার ক্ষেত্রে উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপকগণ দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও নীতি কৌশল নির্ধারণ করেন । অন্যদিকে তা বাস্তবায়নের জন্য মধ্য পর্যায়ের ব্যবস্থাপকগণ বিভাগীয় পরিকল্পনা প্রণয়নসহ নিচের স্তরের ব্যবস্থাপকদের নিকট থেকে কাজ আদায়ে মুখ্য ভূমিকা পালনে সচেষ্ট থাকেন। স্বাতন্ত্র্য নির্ধারণের সুবিধার্থে ব্যবস্থাপনার উচ্চ বা শীর্ষ পর্যায়কে প্রশাসন নামে অভিহিত করা হয় । প্রশাসন হলো একটা দেহের মস্তিস্ক স্বরূপ । কারণ মস্তিস্ক করণীয় নির্ধারণ করে । আর তা বাস্তবায়িত হয় বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে । সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় প্রশাসন মুখ্য করণীয় বা পকিল্পনা ও নীতি কৌশল নির্ধারণ করে আর ব্যবস্থাপনা (মধ্য ও নিম্ন পর্যায়) তা বাস্তবায়ন করে থাকে । এরূপ বিবেচনায় ব্যবস্থাপনা প্রশাসনের অধীন । প্রতিষ্ঠানের কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা অধিক মাত্রায় প্রশাসন ভোগ করে এবং সেখান থেকে তা নিচের পর্যায়ের ব্যবস্থাপকদের নিকট ক্রমান্বয়ে ন্যস্ত হয় । একটা বৃহদায়তন প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক পর্যায়ে শীর্ষ নির্বাহীর সংখ্যা কম থাকে কিন্তু ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে ব্যবস্থাপকের সংখ্যা বেশি হয় । প্রশাসনে চিন্তনীয় বা মানসিক শ্রম সম্বলিত কাজ বেশি থাকে সেক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার পর্যায় অনুযায়ী করণীয় (Doing) অর্থাৎ শারিরীক শ্রম নিচের পর্যায়ে বাড়তে থাকে । নিম্নে ব্যবস্থাপনার স্তর ভেদে প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনার উপস্থিতি রেখাচিত্রে তুলে ধরা হলো :